
অ্যান্ড্রয়েড এপস ডেভেলপমেন্ট শিখে আয় বর্তমানে ইন্টারনেট এর ৬৩% মোবাইলের দখলে। বিলিয়ন ডলারের মার্কেট মোবাইল এ্যাপ। USA এর প্রাপ্ত বয়স্ক দৈনিক প্রায় ৬ ঘণ্টা মোবাইল এ্যাপ নিয়ে থাকে। ফরচুন ৫০০ কোম্পানির সকলে এখন মোবাইল এ্যাপ এ নিজেদের ব্যাবসায় করছেন। মোবাইল এ্যাপ এর মধ্যে সবার উপড়ে জায়গা করে নিয়েছে Android. আমারিকা তে এখন একজন এন্ড্রয়েড এ্যাপ ডেভেলপার এর গড় বেতন প্রায় ৯৭ হাজার ডলার প্রতি বছর।
সময়ের পরিক্রমায় প্রযুক্তির সহজলভ্যতায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা। বর্তমানে সারা বিশ্বে স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ কোটি ৮০ লাখ। এর মধ্যে ৮৫ শতাংশের ও বেশি হচ্ছে এন্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহারকারী। সর্বস্তরের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকার দরুণ এর ব্যবহারকারীর সংখ্যাটা অত্যন্ত বেশি। তাই সময়ের সাথে তাল রেখে অনলাইনে প্যাসিভ ইনকাম করতে চাইলে এন্ড্রয়েড এপস ডেভেলপমেন্ট হতে পারে আপনার জন্য স্মার্ট ক্যারিয়ারের নতুন দিগন্ত। আর এই বিষয়টির গভীর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করাই আমাদের আজকের উদ্দেশ্য। লিনাক্স কার্নেল এবং অন্যান্য ওপেন সোর্স সফটওয়্যারের সংশোধিত সংস্করণের উপর ভিত্তি করে তৈরীকৃত মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম ই হচ্ছে এন্ড্রয়েড।
স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট এর মতো টাচস্ক্রিন মোবাইল ডিভাইসগুলো জন্য মূলত এটি ডিজাইন করা হয়। আর এই ডিভাইসগুলো ব্যবহারের সময় আমরা আমাদের প্রয়োজন মতো বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার বা এপ্লিকেশন ব্যবহার করে থাকি। যেমন,বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ (ফেসবুক,টুইটার,ম্যাসেঞ্জার,হোয়াটসএপ,ইমো ইত্যাদি), এছাড়াও ফটো এডিটিং,গেমস ইত্যাদি বিভিন্ন অ্যাপ থেকে শুরু করে অনেক বৈচিত্র্য রকমের অ্যাপ আমরা ব্যবহার করে থাকি। এন্ড্রয়েড ডিভাইসে ব্যবহারযোগ্য এই অ্যাপ গুলোই মূলত এন্ড্রয়েড অ্যাপ। প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের মাধ্যমে অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপাররা এই অ্যাপ গুলো তৈরী করে থাকেন। একজন এন্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপারের যেই দক্ষতাগুলো প্রয়োজনঃ কম্পিউটারের সুষ্ঠু ব্যবহার,কার্যপ্রণালী,গঠন সম্পর্কে পুর্ণাঙ্গ জ্ঞান থাকতে হবে। বিভিন্ন জটিল গানিতিক সমস্যাবলি সমাধান এবং যুক্তি প্রয়োগ করতে জানতে হবে। ডেটাবেজ সিস্টেম,ক্লায়েন্ট সার্ভার,বাইনারী,ডিজিটাল লজিক,অপারেটিং সিস্টেম এসবের খুটিনাটি বিষয় সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখতে হবে। Java, C++, C# কিংবা kotlin ইত্যাদি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এ বিশেষ দক্ষতা আনতে হবে।
Java এবং kotlin দুইটাই অফিসয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ।যেকোনো একটি দিয়ে কাজ করলেই হয়।তবে Java ল্যাঙ্গুয়েজে দক্ষতা থাকা উত্তম। এছাড়াও CSS,HTML,JavaScript ইত্যাদি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ল্যাঙ্গুয়েজ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখতে হবে। এন্ড্রয়েড ডিভাইসের অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস সম্পর্কে জানা জরুরি। এবং গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইন ও জানা প্রয়োজন। এছাড়াও বিভিন্ন ভেরিয়েবল, অ্যারে, লুপ, অপারেটর, স্টেটমেন্ট, কন্ডিশন, ইটারেটর, মেমোরি ম্যানেজমেন্ট, ফাইল অপারেশন, বিএফএস, ডিএফএস ইত্যাদি সম্পর্কে বিশেষ ধারণা থাকতে হবে। আয়ের ধরন এন্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপারদের মাসিক ইনকাম তাঁদের যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন হয়ে থাকে। বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে একজন এন্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপারের বেতন বিশ হাজার কিংবা তার অধিক হতে পারে। বিভিন্ন কোম্পানি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে একজন এন্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপারের বেতন ত্রিশ হাজার থেকে শুরু করে কয়েক লাখ পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়াও অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে একজন দক্ষ এন্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপার কাজের ধরন ও চাহিদা অনুযায়ী মাসে কয়েক লাখ টাকাও ইনকাম করতে পারেন। অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে একজন এন্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপার প্রতি ঘন্টায় ২৫ থেকে ৫০ ডলার চুক্তিতেও কাজ করে থাকেন। তাই বলা যায়, আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা যত বেশি হবে আপনার আয় তত বাড়বে।
অ্যাপ ডেভেলপারের ভবিষ্যত এন্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এর বেশিরভাগই হয়ে থাকে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে। আর এই কাজ গুলো করার ক্ষেত্রে উন্নত দেশের কোম্পানীগুলোর সুনজরে রয়েছে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সাররা। কারণ,তুলনামূলক কম ব্যায়ে এসব কোম্পানিগুলো আমাদের দেশীয় ফ্রিল্যান্সার দিয়ে কাজ করাতে পারেন। তাই এন্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপারদের চাহিদা ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে প্রচুর। এছাড়াও প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ই–কমার্স সাইট গড়ে উঠছে। এক্ষেত্রে ই–কমার্স গুলোর প্রয়োজন পড়ছে অ্যাপ এর। এসব ই–কমার্স এর পরিধি বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে এন্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপারের চাহিদা। তাই ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় বলা যায়, এন্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এ রয়েছে উজ্জ্বল ক্যারিয়ারের হাতছানি।